শুরু হলো 'ঢাকা লিট ফেস্ট' এর সপ্তম আসর

জেসমিন পাপড়ি
2017.11.16
ঢাকা
বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে আয়োজিত তিন দিনব্যাপী ঢাকা লিট ফেস্ট উদ্বোধন করেন সিরিয়ার কবি আদোনিস। বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে আয়োজিত তিন দিনব্যাপী ঢাকা লিট ফেস্ট উদ্বোধন করেন সিরিয়ার কবি আদোনিস। ১৬ নভেম্বর ২০১৭।
নিউজরুম ফটো

বাংলাদেশের গবেষণা, সাহিত্যকর্ম ও সংস্কৃতির সঙ্গে বিশ্ববাসীর পরিচয় ঘটানোর উদ্দেশ্যে দেশি-বিদেশি লেখকদের অংশগ্রহণে ঢাকায় শুরু হয়েছে ঢাকা লিট ফেস্ট-২০১৭। বাংলা একাডেমি চত্বরে সাহিত্যিকদের এ মিলনমেলা চলবে আগামী ১৮ নভেম্বর পর্যন্ত। সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের পৃষ্ঠপোষকতায় বৃহস্পতিবার এ উৎসবের উদ্বোধন হয়।

সিরিয়ার কবি আদোনিস দক্ষিণ এশিয়ার সবচেয়ে বড় এই সাহিত্য উৎসবের উদ্বোধন করেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন ঢাকা লিট ফেস্টের তিন পরিচালক কাজী আনিস, সাদাফ সায্ ও আহসান আকবার এবং বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক শামসুজ্জামান খান। অনুষ্ঠানে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জীবনীভিত্তিক গ্রাফিক নভেল ‘মুজিব’ বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করা হয়।

সপ্তমবারের মতো আয়োজিত লিট ফেস্ট অন্য যে কোনো সময়ের চেয়ে বড় পরিসরে আয়োজন করা হয়েছে বলে বেনারকে জানান ঢাকা লিট ফেস্টের পরিচালক সাদাফ সায্। তিনি বলেন, “তিন দিনব্যাপী লিট ফেস্টে এবার দেশের বাইরের ৭৫ জন লেখক, গবেষক এবং চিন্তাবিদ অংশ নিচ্ছেন। এ ছাড়া থাকছেন বাংলাদেশের দেড় শতাধিক লেখক, গবেষক ও শিক্ষক।”

ঢাকা লিট ফেস্ট প্রথমবার আয়োজন করা হয়েছিল ২০১১ সালে।

এ আয়োজন বিশ্ব সাহিত্যের সঙ্গে বাংলাদেশকে পরিচয় করিয়ে দেওয়ার পাশাপাশি দেশীয় ঐতিহ্যগুলোকে বিশ্বের সামনে তুলে ধরার একটি প্রয়াস বলে সাদাফ জানান।

আয়োজনের ব্যাপকতার বিষয়টি উল্লেখ করে সাদাফ সায্ বলেন, “এবারের লিট ফেস্টে আলোচনা, পারফরম্যান্সসহ নানা আয়োজনের প্রায় ৯০টি সেশন আয়োজন করা হয়েছে। বড়দের পাশাপাশি শিশুদের জন্যও রয়েছে বিভিন্ন আয়োজন।”

বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক মনে করেন, “দেশি বিদেশি লেখকদের মিলন মেলা হয়ে উঠবে এ আয়োজন। ফলে আমাদের গবেষণা, সাহিত্যকর্ম ও সংস্কৃতির সঙ্গে বিশ্বের সাহিত্যিক ও গবেষকদের পরিচয় ঘটবে। এ এক অনন্য সুযোগ।”

তিনি বেনারকে বলেন, “বাংলাদেশে সপ্তমবারের মতো এ আয়োজন সাহিত্য সমাজে নতুন এক মাত্রা নিয়ে আসবে। লিট ফেস্টে সফল আয়োজন বাংলাদেশকে বিশ্বের বুকে নতুন সম্মান এনে দেয়।”

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে লিট ফেস্টের অপর পরিচালক কাজী আনিস বলেন, “ভাষাভাষীর দিক থেকে বাংলা পৃথিবীর সপ্তম বৃহত্তম ভাষা। আমাদের নিজস্ব সংস্কৃতি রয়েছে। সেই সংস্কৃতি ও ভাষা-সাহিত্যকে বিশ্বের সামনে তুলে ধরতে এই লিট ফেস্টের ভূমিকা রাখবে।”

এ আয়োজনের বিষয়ে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের গল্পকার কণা বসু মিশ্রা বেনারকে বলেন, “সাহিত্যের কোনও সীমানা নেই- ঢাকা লিট ফেস্ট সেটি আবারও প্রমাণ করল। এ ধরনের অনুষ্ঠানের মাধ্যমে প্রত্যন্ত অঞ্চলের সাহিত্যও বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে দেওয়া যায়।”

অংশ নিচ্ছেন যারা:

ঢাকা লিট ফেস্টের ওয়েবসাইটে এবারের আয়োজনে অংশগ্রহণকারী অতিথিদের তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। বিদেশি অতিথিদের মধ্যে মার্কিন সাহিত্যিক লিওনেল শ্রিভার, সিরিয়ার কবি আদোনিস, নাইজেরিয়ার সাহিত্যিক বেন ওক্রি, অভিনেত্রী টিল্ডা সুইন্টন, পদ্মশ্রী পুরস্কারপ্রাপ্ত ভারতীয় কথাসাহিত্যিক নবনীতা দেব সেন, কথাসাহিত্যিক উইলিয়াম ড্যালরিম্পেল, লেখক এসথার ফ্রয়েড প্রমুখ এতে অংশ নিচ্ছেন।

বাংলাদেশ থেকে অংশ নিচ্ছেন সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম, মঈনুল আহসান সাবের, সেলিনা হোসেন, আনোয়ারা সৈয়দ হক, সলিমুল্লাহ খান, শামসুজ্জামান খান, আসাদ চৌধুরী, আনিসুল হক, কায়সার হক, খাদেমুল ইসলাম, আলী যাকেরসহ দেড় শতাধিক সাহিত্য ব্যক্তিত্ব।

এবারের আয়োজনে প্রথমবারের মতো ব্রিটিশ সাহিত্য জার্নাল গ্রান্টার মোড়ক উন্মোচন হবে বলে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে জানান সাদাফ সায্।

জেমকন সাহিত্য পুরস্কার ঘোষণা

লিট ফেস্টের প্রথম দিনে বাংলাদেশে সাহিত্য জগতের স্বনামধন্য ‘জেমকন সাহিত্য পুরস্কার’ ঘোষণা করা হয়। এবার এ পুরস্কার পেয়েছেন কবি ও লেখক মোহাম্মদ রফিক, আশরাফ জুয়েল, মামুন অর রশিদ ও নুসরাত নুসিন। লিট ফেস্টে দক্ষিণ এশিয়ার বিভিন্ন দেশের লেখকদের ইংরেজি ভাষায় লেখা বা অনুবাদ করা সাহিত্যের জন্য সম্মানজনক ডিএসসি পুরস্কার ঘোষণাও করা হবে।

মন্তব্য করুন

নীচের ফর্মে আপনার মন্তব্য যোগ করে টেক্সট লিখুন। একজন মডারেটর মন্তব্য সমূহ এপ্রুভ করে থাকেন এবং সঠিক সংবাদর নীতিমালা অনুসারে এডিট করে থাকেন। সঙ্গে সঙ্গে মন্তব্য প্রকাশ হয় না, প্রকাশিত কোনো মতামতের জন্য সঠিক সংবাদ দায়ী নয়। অন্যের মতামতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হোন এবং বিষয় বস্তুর প্রতি আবদ্ধ থাকুন।