বেইলি রোডে বহুতল ভবনে ভয়াবহ আগুনে কমপক্ষে নিহত ৪৪

আহম্মদ ফয়েজ ও জেসমিন পাপড়ি
2024.02.29
ঢাকা
বেইলি রোডে বহুতল ভবনে ভয়াবহ আগুনে কমপক্ষে নিহত ৪৪ আগুনে পড়ে যাওয়া ঢাকার বেইলি রোডের গ্রিন কোজি কটেজ ভবনটি ঘিরে রেখেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ সিআইডি। ১ মার্চ ২০২৪।
[জীবন আহমেদ/বেনারনিউজ]

রাজধানী ঢাকার বেইলি রোডে বহুতল একটি ভবনে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে কমপক্ষে ৪৪ জনের মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে। এদের মধ্যে ২১ জন নারী এবং চার শিশু রয়েছে।

আহত হয়েছেন অন্তত ২২ জন।

২৯ ফেব্রুয়ারি (বৃহস্পতিবার) রাতে ভবনটিতে আগুন লাগে।

শুক্রবার সকাল নয়টা পর্যন্ত নিহত অন্তত ৩৮ জনের পরিচয় শনাক্ত করা হয়েছে। বাকি ছয়জনের পরিচয় তখন পর্যন্ত পাওয়া যায়নি।

এ ঘটনায় নিহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

গ্রিন কোজি কটেজ নামের এই ভবনে বেশ কিছু খাবারের দোকান ছিল। এছাড়া তৃতীয় তলায় ছিল একটি পোশাকের দোকান। অনেকেই পরিবার নিয়ে এসব দোকানে আসতেন।

এর আগে বৃহস্পতিবার রাত ১ টা ৫৫ মিনিটে কমপক্ষে ৪৩ জন মারা গেছেন বলে নিশ্চিত করেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী সামন্ত লাল সেন ।

সে সময় স্বাস্থ্যমন্ত্রী সাংবাদিকদের জানান, বেইলি রোডের অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় ১০ জন শেখ হাসিনা বার্ন ইনস্টিটিউটে এবং ৩৩ জন ঢাকা মেডিকেলে মারা গেছেন। মন্ত্রী আরো জানান, উদ্ধার হওয়া ২২ জনের অবস্থাও আশঙ্কাজনক। তাঁদের সবার কণ্ঠনালী পুড়ে গেছে।

WhatsApp Image 2024-02-29 at 21.53.29_800430f0.jpg
রাজধানীর বেইলী রোডে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় নিখোঁজ ছেলেকে খুঁজতে এসে পুড়ে যাওয়া ভবনটির দিকে তাকিয়ে অঝোরে কাঁদছেন একজন মা। ১ মার্চ ২০২৪। [জীবন আহমেদ/বেনারনিউজ]

রাতে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিস কর্তৃপক্ষ জানায়, বৃহস্পতিবার (২৯ ফেব্রুয়ারি) রাত ৯টা ৫০ মিনিটের দিকে বেইলি রোগের একটি ভবনের দ্বিতীয় তলায় ‘কাচ্চি ভাই’ নামের একটি খাবারের দোকানে আগুন লাগে। দীর্ঘ চেষ্টায় রাত ১১টা ৫০ মিনিটে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা হয় বলে জানান ফায়ার সার্ভিসের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাইন উদ্দিন।

তিনি জানান, ফায়ার সার্ভিসের ১৩টি ইউনিটের চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা হয়েছে।

তদন্ত কমিটি গঠন

আগুনে হতাহতের ঘটনায় পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে ফায়ার সার্ভিস। বৃহস্পতিবার মধ্যরাতেই তদন্ত কমিটি গঠনের ঘোষণা দেওয়া হয়।

বাহিনীর মিডিয়া সেলের তথ্য অনুযায়ী, কমিটির সভাপতি ফায়ার সার্ভিসের পরিচালক অপারেশন লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম চৌধুরী।

এই আগুনের ঘটনায় ইতালি প্রবাসী সৈয়দ মোবারকসহ একই পরিবারের পাঁচজন নিহত হয়েছেন। মোবারকের চাচাতো ভাই সৈয়দ রিয়াদ। 
তিনি বেনারকে বলেন, "রাত ৮টার দিকে সৈয়দ মোবারক তার স্ত্রী স্বপ্না, মেয়ে সৈয়দা তাশফি, ছেলে সৈয়দা নূর ও সৈয়দ আব্দুল্লাহকে নিয়ে বাসা থেকে বের হন ‘কাচ্চি ভাইতে’ খাওয়ার জন্য। তারা সেখানে পৌঁছানোর পর এ দুর্ঘটনা ঘটে। এতে তারা সবাই মারা যান।"

"আমার ভাই তার স্ত্রী ও সন্তানদের ইতালি নিয়ে যেতে দেশে এসেছিলেন। সবার ভিসা হয়েছে। এক মাসের মধ্যে ইতালি যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু তারা ইতালি পরিবর্তে পরপারে পাড়ি দিলো,” তিনি বলেন।

মন্তব্য করুন

নীচের ফর্মে আপনার মন্তব্য যোগ করে টেক্সট লিখুন। একজন মডারেটর মন্তব্য সমূহ এপ্রুভ করে থাকেন এবং সঠিক সংবাদর নীতিমালা অনুসারে এডিট করে থাকেন। সঙ্গে সঙ্গে মন্তব্য প্রকাশ হয় না, প্রকাশিত কোনো মতামতের জন্য সঠিক সংবাদ দায়ী নয়। অন্যের মতামতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হোন এবং বিষয় বস্তুর প্রতি আবদ্ধ থাকুন।